Saturday 9 November 2019

স্বীকারোক্তি


মা, আমি আবার আসিবো ফিরে,
আমাদের জহরালয়ে, আমাদের এই সুখ নীড়ে

মনের সব দুঃখের শিকল ছিঁড়ে,
আবার ফিরতে হবে কাজের ভিড়ে

মনখারাপের বইটা তাই রইলো তাকে,
তোমার চোখের জল মোছা আঁচলের ফাঁকে.

চললাম মা, আবার কথা হবে হোয়াটস্যাপ এ
নাড়ির টান টা দেখবো না হয় স্মার্ট ওয়াচ এ.

আবার বিমান চড়ে দেব বিদেশ বিভুঁই এ পাড়ি,
রাগিস না মা, আবার আসবো, করিস না তুই আড়ি.

সেই যবে তোর হাত ধরে হাটতে শিখলাম,
তোর কোলেই শুরু মা, আমার লাইফ এর ম্যারাথন.

তোর হাতের ভাত ডাল তো মা, স্বর্গের অমৃত,
এখন থেকে আবার জাঙ্ক ফুড আর ডায়েট অবিরত.

তোর আঁচলের গন্ধ মাগো, পারফিউম ও ফেল,
ধূপের কাঁঠি, পুজোর গন্ধ, ইলিশ মাছের তেল .

করবো মিস বড্ডো মা রে, কান্না আমার পায়,
খেয়াল রাখিস এলাম তবে, বেলা বয়ে যায় ..

Wednesday 27 March 2019

গন্তব্য সুইস

দুধারে  তুষার শুভ্র  পাহাড়  আর  পাইন গাছের  সারি,
সাদা  চাদরে  ঢাকা  রাস্তার  মাঝে  ছুটে চলেছে  গাড়ি 
আর  পাশাপাশি  পেঁজা তুলোয় মোড়া ছোটো ছোটো  বাড়ি,
কুয়াশা  এখন, অচেতন  মন  আজ  কাজের  সাথে আড়ি.

কিছুটা  পেরোলো  পথ, এখন  দুপাশে  উইন্ডমিলের  সারি,
দোদুল্যমান  নিজের  ছন্দে, পাখিরা  দিচ্ছে  দূরে  পারি 
তুষার  কোনা হিমশীতল  হাওয়া আর  বরফে  ঢাকা  নদী,
রাস্তা  হচ্ছে  ক্রমশ  খাড়া, গাড়ির  wheel  ও  বাড়াচ্ছে  তার গতি.
আর  আনমনা  আমি  লাগিয়েছি  শঙ্খচিলের  ডানা আমার  পিঠে,
বেপরোয়া  মন, এই  স্বর্গীয়  সৌন্দর্য  দেখে  থাকছে  না  আর  সিট  এ.

আরো  কিছুটা  যেতেই এবার শুধু চারিদিকে শুভ্র সমারোহ,
উইন্ডস্ক্রিন  এ  রুপোলি  জলকণা রা  খেলা  করছে  অবিরত.
কাটাগাছ গুলি  খুব সিরিয়াস, বরফ  লুফেছে  সহস্র  হাত  দিয়ে,
এবার ঢুকছি একটু  শহরতলিতে, ইউরোপিয়ান  স্থাপত্যের  ভিড়ে.

শহর পেরিয়ে  এখন  সরু  আঁকাবাঁকা  পথে  ব্রিজ  এ  চড়ছে গাড়ি,
চালক  ও  কিন্তু  বেশ  cautious, মোটেই নয় আনাড়ি.
ঢুকছি  এবার  স্ট্রাসবুর্গ  এ, অবশেষে  কিছুটা  পেলাম  দেখা  সবুজের,
এখানে চলছে  বর্ষণ  ভারী, ছুটছে  থ্যালিস  প্যারিস  এর.

অবশেষে  সূয্যি ডুবেছে, সন্ধ্যা  নেমেছে  ফ্রেইবার্গ পেরিয়ে,
 বাস  ছুটছে  গতিতে, ব্যাসেল  হয়ে  যাবে  গন্ত্যবের  দিকে.
এবারে  আমার  ভ্রমণ  লেখনীর  এখানেই  করি  অন্ত,
ভীষণ  ঠান্ডা, কাঁপছি  আমি, reached to my গন্তব্য..
 

Thursday 28 February 2019

ভাষ্যলাপ

শুনলাম বাংলা তোর নাকি পিঠ ঠেকে গেছে ?
বঙ্গে নাকি আর কহে না কেউ তোর বুলি ?
আশ্চর্যান্বিত আমি, কেন রে তবে এ বিদেশ বিভূঁইয়ে বসে,
আজও স্মৃতির মনিকোঠায় আমার, তোর সেই ঠাকুমার ঝুলি.


তুই তো সেই গৌরবান্বিত ভাষা, যার জন্ম এখনো বিস্ময়,
কেউ বলে তুই ইন্দো ইউরোপিয়ান বুলি,
আবার কেউ বলে তুই নাকি চর্যাপদে ছিলি,
কিন্তু এখন কথোপকথনে তুই নাকি ডুমুরের ফুল, হাল তোর দুর্ভিসয়

অগত্যা লিখেই স্মৃতিচারণা করছি তোর ঐতিহ্যশীল ভান্ডারের ,
শুনেছিলাম ফরাসি ভাষা প্রথম হলে,
 তুই নাকি দ্বিতীয়া?
তোর আক্ষরিক সৌন্দর্য্যের জেরে, এই বিশ্ব ব্রম্ভান্ডের .

যারা ভুলিয়েছে তোকে আমার মাতৃভাষা, তারা কি ভুলিবে এই বিশ্বকেও?
বিশ্ব মাতৃভাষা দিবস তো তোর নামেই , তোর জন্যই আমরা আজও একুশে,
তোর জন্যই আমরা আছি ইতিহাসে, বর্তমানে এবং স্বর্ণ সাহিত্যে


জানি এখন হাল ফ্যাশন, নতুন ট্রেন্ড আর সমালোচনার ভার,
তবুও তোর শিরদাঁড়া আজও অটুট স্তম্ভ,
তবুও আজও তুই বাজাস আলোর বেনু ,
তুই ই অসীম জ্ঞান আর ভান্ডারের দ্বার .

বাংলা তুই আজও আমার মনের মনিকোঠায়, আজও তুই ই আমার নিত্য বুলি,
তোর জন্যই গাঙ্গুরের তীরের মৃত্যু ডাক, বাঁশ বাগান, জোনাকির আলো,
তোর ই গদ্যে পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি ..

Wednesday 9 January 2019

কলির কবি

সে তো কবি, বাউন্ডুলে,
উল্কি আঁকা হাতে লেখে
চশমা চোখে অঙ্ক কষে,
কোডিং ডিকোডিং এ মজে.

সে তো কবি, বাউন্ডুলে,
উইন্ড স্ক্রিনএই ছবি আঁকে
ব্যালান্স শিট আর স্মার্ট ফোনে
দিনের শেষ হয় গুগল ঘেটে.

সে তো কবি, বাউন্ডুলে,
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বহু দূরে,
কফি র কাপে, বইয়ের ভিড়ে,
মন খারাপের হিসেব লেখে.

সে তো কবি, বাউন্ডুলে,
দুশ্চিন্তাগুলো পাকাচুলে
সময় কাটে শেক্সপিয়র এ,
ও. হেনরির শেষ পাতাতে.

সে তো কবি, বাউন্ডুলে,
ইচ্ছাগুলি নাভিশ্বাসে,
ছুটছে দ্রুত আলোর বেগে,
অপূর্ণতায় যায় বেজায় রেগে.

সে তো কবি, বাউন্ডুলে,
হৃদয় ও তার জলদি ভোলে,
এসচারের রিলেটিভিটির সিঁড়ি চড়ে,
ভার্চুয়ালিটি ছিড়ে দুমড়ে পড়ে.

সে তো কবি, বাউন্ডুলে,
পেন্ডুলামের ছন্দে দোলে,
ইমোশনের একুয়েশন ভুলে,
তাই আবার কবিতাতে গল্প বলে..