Friday 28 February 2020

অভিশপ্ত ভ্যালেনটাইন


আকাশে নেমেছে সন্ধ্যা, দূরে কাক পক্ষী যাচ্ছে উড়ে,
নীলা ছুটছে, ধরতে হবে ট্যাক্সি, তার বাড়িটা বহু দূরে |

দিনটা ছিল ভ্যালেনটাইন ডে, তবুও আকাশে কালো মেঘের ফণা,
নীলা ট্যাক্সি পেলো অবশেষে; গাড়ির কাঁচে বৃষ্টির জল, সে হয়েছে আনমনা |

হটাৎই ফোন টা বেজে ওঠে, ফোনের ওপারে সৌভিক...
কাজের শেষে পেয়েছে সময়, জানাতে ভ্যালেনটাইন এর উইশ আন্তরিক |

ধীরে ধীরে বাড়ছে বাতাস, বইছে ঝড়; আর অঝোরে হচ্ছে শিলা বৃষ্টি,
ট্যাক্সির উইন্ড স্ক্রিন ঝাপসা হয়েছে, আর অন্যদিকে চলছে নীলার বার্তালাপ মিষ্টি |

হটাৎ করেই ধেয়ে আসে ট্রাক; বেগতিক হয় ট্যাক্সির স্টিয়ারিং...
ফোনের ওপারে সৌভিক: "নীলা হবে কি কুইন অফ দিস কিং?"

নীলার উত্তরটা শোনার আগেই সৌভিকের ফোন টা যায় কেটে..
ফোনের ওপারে রক্তবন্যা..হৃদস্পন্দন ছুটছে লাস্ট রেট এ |

উদ্বিগ্ন সৌভিক, অগত্যা টেক্সট পাঠায়.. নীলা আর ইউ ফাইন ?
গল্প শেষ সৌভিক, আমি ছিলাম তোমার অভিশপ্ত ভ্যালেনটাইন ||

আমার প্রথম কিস


দিনটা ছিল পূর্ণিমা, তোদের বাড়ির ছাদে; সেটা ছিল আমার প্রথম কিস..
তোর ওই লিপগ্লস লাগানো ঠোঁটে ঠোঁট লাগাতেই, শরীর জুড়ে ছড়ালো প্রেমের বিষ |

তখন তুই আর ছিলি কি সেই বিদ্রোহী মেয়েটা? যাকে দেখেছি কলেজ এ...
হোক কলরব বলে করতে আর্তনাদ, আবার দেখেছি কৃষ্ণকলির সাজে,

নৃত্যনাট্যে, আবার কখনো কলেজ ক্যান্টিন এ করতে পলিটিকাল ডিবেট,
আজ সেই সাহসিনী কিনা নিজের বাড়ির ছাদেই করছে প্রথম ডেট...

দেখ ওই জোনাকিরা দিচ্ছে হানা, হিমে ঢাকা তারারাও ছলছল চোখে,
দেখছে তোর আর আমার নিশীথ যাপন, নিঃসাড়ে, রয়েছে তারাও স্বর্গসুখে |

তোর ওই কাজল পড়া চোখের চাহুনি আর তোর লাল ঠোঁট, সেকি ম্যাগনেট ?
বিষ ছড়াচ্ছে দ্রুতগতিতে শরীরে, অগত্যা বাড়ছে আমার পালস রেট |

না মনে হচ্ছে আমি possessed, তোর আঁখি পল্লবে চেয়ে...
ছুটছে বিদ্যুৎ সারা শরীরে আমার, দ্রুত গতিতে ধমনীতে যাচ্ছে বয়ে |

মনে হচ্ছে সারা পৃথিবীটা paused , আর তুই এক স্বপ্ন নয়তো মরীচিকা..
হটাৎ মা ডাকে; বাবলু ঘুম থেকে ওঠ, পড়তে এসেছে অম্বিকা ||

Thursday 27 February 2020

চকলেট প্রেম


মনে পরে রিনি তোকে দেওয়া আমার প্রথম সেই চকলেট,
তখন ছিলাম কলেজ পড়ুয়া, কলেজ যেতে দুজনের এ হয়েছিল লেট |

তুই কি রাগ করেছিলিস বল..চকলেট এর উপর গিয়েছিলিস চটে,
ভাগ্যিস চকলেট টা ছিল নির্জীব, নয়তো তোর রাগের কথা কলেজে যেত রটে |

তবু তোর ভালোবাসা টা ছিল ওই চকোলেটের চেয়েও মিষ্টি,
তোর হাসিতে আমার লাইফে আসতো বসন্ত, তোর কান্নায় ঝরতো বৃষ্টি |

তবুও হিংসা হতো চকোলেটের প্রতি তোর ওই অন্ধ ভালোবাসায়,
ভাবতাম হতাম যদি চকলেট ফ্যাক্টরি র চার্লি, ভার্চুয়াল বাস্তবতায় |

কিন্তু হয়তো চকলেট ও হিংসা করতো দেখে আমাদের এটার্নাল বন্ড,
সেই ছোট থেকে  ১০ টা বছর, সময়ের সাথে গাঁটছড়া হয়েছে আরো স্ট্রং |

এরপর চকলেট আর তোর আমার ত্রিকোণ প্রেমে,
বাজি মারলাম আমি বিয়েটা সেরে, এলাম তোর আর আমার সিঙ্গেল ফ্রেম এ |

আজ বিয়ের পরে আমাদের প্রথম চকলেট ডে.. রিনি,
তোর জন্য এনেছি তোর প্রিয় ডেয়ারি মিল্ক, হাসিস না..তোকে আমি ভালো করে চিনি ||


আমার টেডি



আজ আমার ঘরে এসেছে ছোট্ট একটি টেডি; সে বড়োই বিচ্ছু,
না সে খেলনা নয়, রক্ত মাংসে গড়া এক ছোট্ট শিশু |

জানিনা তার কি ধর্মজাত, এনেছি তারে অনাথালয় থেকে,
আজ টেডি ডে সেলিব্রেশন এ, খুশি আমি, এই টেডি র সিঙ্গেল মা হতে পেরে |

সহস্র ব্রেক আপ এ ভেঙেছিল যে হৃদয়, আজ হয়েছে সে পূর্ণ,
এখন সে কর্তব্য পরায়ণা, ছোটে না দিকবিদিক হয়ে জ্ঞান শুন্য...

শুধু তোর  জন্যই ছেড়েছি স্মোকিং, ধরেছি কুকিং, তোকে খাওয়াবো বলে,
তোর জন্যই healthy রুটিন, বেপরোয়া স্বভাবটা বিসর্জিত অথৈ জলে..

তোর জন্যই করেছি শপিং, কিনেছি আমি হরেক রকম টেডি...
আজ আমি কলেজ গার্ল বা অফিস পাড়ার মেয়ে না, হয়েছি আমি লেডি...

তোকে বেশ খুঁজে পেতাম অনেক আগে, দিনগুলো হয়তো হতো সঠিক,
তোকে করাতাম আলজেব্রার একুয়েশন, খেলতাম হাইড এন্ড সিক |

আমার লাইফ এ, তোর আগমনে খুঁজে পেলাম এক নতুন পৃথিবী,
তুই বোঝালি সম্পর্ক শুধু নাড়ির হয় না,..থ্যাংক ইউ মাই টেডি ||

গরিবের প্রপোজাল


সন্ধ্যা নেমেছে বাঁশবাগানে, চাঁদের মিষ্টি আলো,
চাষীরা সব ফিরছে ঘরে, এবার বাড়ি চলো |

চুপ কর তুই; বসনা একটু, দেখনা ওই জ্যোৎস্না,
আজ তাইতো বাঁধলাম তরী এ ঘাটে, তোর আঁচলটা মেল্না ...

কতদিন তোর কোলে শুয়ে শুনিনি তোর ঘুম পাড়ানী গান,
কতদিন খাইনি তোর হাতের রুটি, আর সেই অবাক জলপান |

চল না  আমার সাথে পালিয়ে, জনবহুল এই কোলাহল ছেড়ে,
গড়বো ছোট্ট কুটির মোরা, থাকবো শাক ভাতটি খেয়ে |

এই দরিদ্রতা আর জাতের লড়াই, খুনোখুনি আর সয়না,
চলনা তোর এই আলির সাথে, আমার প্রিয় ময়না |

ওই শহুরে লোকেরা বলেনা সেই আংটি দিয়ে সিনেমাতে,
করছি প্রপোজ, হবি কি আমার; পালাবি কি এই রাতে ?

নয়তো চল পালাই মোরা এই ভেদাভেদির জাত ছেড়ে,
যেখানে মোদের ভালোবাসা কে নেবেনা কেউ কেড়ে ||

গুমনামী প্রমিস


তোর প্রমিস তা তোলা আছে বইয়ের তাকে,
সময় পেলেই রিক্যাপচুলেট করি অবসরে…
প্রমিস করেছিলি পাশে থাকার হোল লাইফ,
কিছু প্রমিস হয়তো প্রমিস হয়না, অথবা প্রমিস তাই মাইথ |
এখনো মনে পরে যখন বেজে উঠেছিল সেই টেলিফোন,
তোর আসার অপেক্ষায় সাজিয়ে ছিলাম তখন ঘরের কোন |
তুই এলি না, তোর প্রমিস টা রয়ে গেলো ডায়রির পাতায়,
টেলিফোন এ ভাষা কণ্ঠস্বর জানায়, তুই এখন স্মৃতিতে, ইতিহাসের  কথায় |
হয়তো প্রমিসের প্রায়োরিটি টা ছিল তোর কাছে, কিছু ভিন্নতর,
আমাকে দেওয়া প্রমিসটা সেখানে ফিকে, দেশের জন্য তোর শ্রম অবিরত |
আজ ও মনে হয়, তুই সেই কাদা মাখা পায়ে এসে দাঁড়াবি আমার সম্মুখে,
সেতো কাঁদা নয়, সে আমার দেশের মাটি, যার প্রতি ভালোবাসা ছিল তোর চোখে |
সেই জিতলো অবশেষে, বুঝলাম তাকে দেওয়া প্রমিস টাই বেশি দামি,
সহস্র এরূপ মরণপণ প্রমিস তার খাতায়; সবকটাই যদিও গুমনামী ||

Tuesday 25 February 2020

গোলাপ তোকে আমি অন্যভাবে চিনি..


গোলাপ তোকে আমি অন্যভাবে চিনি,
কখনো তুই বাসর রাতের খাটে, কখনো তোকে শ্রাদ্ধের জন্য কিনি |

গোলাপ তুই সুন্দর বড়, তবু তোর গাছের ডালে কাঁটা,
কখনো তুই কাঁটা তারের বেড়ার জালে, কখনো কারোর চুলের খোঁপায় সাঁটা |

গোলাপ তোকে আমি অন্য ভাবে চিনি,
শহীদদের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনে, তোকে আমি কিনি |

গোলাপ তোর আদান প্রদানেই কি ভালোবাসার মান?
তোর তো দেখছি বিশাল ভ্যালু, অঢেল তোর সম্মান |

গোলাপ তোর মাধুরী ছড়িয়ে ছিল শেক্সপিয়ারের ও লেখায়,
তোর সৌরভে এসেছিলো বসন্ত, প্রেম ভেসেছিল কালো মেঘের ভেলায় |

গোলাপ তোকে আমি অন্য ভাবে চিনি,
পড়ন্ত বিকেলে Rose ডে যাপনে তোর কাছে আমি ঋনী |

গোলাপ তোকে আমি ছিড়লাম কেন? তুই তো ছিলি গাছেই ভালো..
আসলে তোর স্থান মরার কফিনেও, শুধু rose ডে তেই তুই জমকালো ||

হবি কি আমার ভ্যালেনটাইন?



ছোট্ট দুটি হাত ধরে সেই একসাথে চলতে শেখা,
হিস্ট্রি তা লাগতো বড়োই বোরিং, তোর থেকেই নোট লেখা..

চলতো সেসব আর চলতো দুষটু মিষ্টি আড্ডা গুলো,
দোলের টাইম এ অন্য রকম লাগতো তোর মুখে ওই রং গুলো..

কিংবা হয়তো তুই লাগতিস অন্যরকম, একদম স্পেশাল,
তারপর মেলামেশা আরো বাড়লো, হলাম বড্ডো সোশ্যাল |

ফেইসবুক আর হোয়াটস্যাপ এ তে রাতজাগা আর চ্যাট এ ,
তোর জন্য প্রথম শাড়ি টা কিনেছিলাম সেই মঙ্গলা হাটে |

মেলা দেখা, গল্প গুজব, চড়ে নাকর দোলনা,
দিন গুলো ছিল অসীম সুখের, আজ ও ভোলা যায়না |

তোর সাথে সেই ফুচকা খাওয়া আর পাপড়ি চাট,
মুভি দেখা, প্রচুর শপিং আর পুজো জমজমাট |

আরো একধাপ এগিয়ে এবার করতে চাই তোরে মাইন,
বলনা নীরা, তুই হবি কি আমার ভ্যালেনটাইন ?

উইশ ইউ হ্যাপি ভ্যালেনটাইন


বৃষ্টি ভেজা রাস্তা.. আর গাড়ির উইন্ডস্ক্রিনের জমা জল,
এখনো মনে করায় গাড়ির কাঁচে তোর আঁকা জলছবি, তোর কোলাহল |

মনে পরে তোর নেইল আর্ট এবং এলোমেলো কেশরাশি,
তোর গলায় রেকর্ডেড মেটাল মিউজিক, আজ ও ভালোবাসি |

তোর সেই আইল্যাশ.. ঘন কালো কাজল মাখা চোখ,
মনে পরে আজ, মনে পরে তোর সহস্র অভিযোগ |

কেন চলে গেলি? হতো তো ঐটুকু কথা কাটাকাটি,
মারতিস আমায়, করতিস না অনেক ঝগড়াঝাটি |

কিন্তু করলি না..বরং করলি নিঃশব্দ অভিমান...
বুঝতেই দিলিনা, কখন গাঁটছড়া টা হারালো তার প্রাণ |

তবু কেন পড়িস আজ ও শাখা পলা, এখনো উল্কি আঁকা হাতে,
কেন এখনো করিস টেক্সট, হোয়াটস্যাপ এ ওতো রাতে ?

ভুলিস নি তো কিছুই সোনা, ভুলেছিস শুধুই সারনেম টা,
এখনো তো পড়িস গলায়, আমার দেওয়া সেই চেন টা |

তবুও রাগে শেষমেশ ছিড়লাম দড়িটা, করলাম পেপার এ সাইন..
তারপর এস-এম-এস টা এলো তোর, উইশ ইউ হ্যাপি ভ্যালেনটাইন ||

Monday 24 February 2020

টেডি ডে


ও বাবা, আজ টেডি ডে; আমার টেডি চাই,
মা রে আমার সেটা কি রে, কোথায় গেলে পাই ?

সে ছোট্ট, বাবা; মিষ্টি ভারী, ভালুর মতো রূপ,
ওরে বেটি যাসনা তুই ভালুর কাছে, করিয়ে দেবে চুপ |

কি যে বলো বাবা, ওই যে দেখো ওই দূরের বহুতল,
ওদের তো বাচ্চা গুলোর হরেক রঙের টেডি আছে অঢেল |

দিনের শেষে ভাত টি খেয়ে, ওরা ঘুমায় টেডি নিয়ে,
জন্মদিনের শুভেচ্ছাও জানায় টেডি গিফট দিয়ে |

আর আজ তো টেডির দিন গো বাবা, দাওনা একটা টেডি,
ছোট্ট টেডি পাওয়ার জন্য আমি ওই বিড়ি বাধতেও রেডি |

বিড়ি কেন বাঁধবি রে মা, তুই স্কুল এ যা,
পড়াশোনা করেই তো পাবি, তোর টেডি র দেখা ||

Sunday 23 February 2020

কিস ডে


তোর সাথে সেই প্রথম দেখা শিশির ভেজা ঘাসে,
ময়দানের সেই হই হুল্লোড় আজ ও স্মৃতির কোটায় ভাসে |

দিনটা ছিল  আমার প্রথম ডেট, ছিলাম নারভাস,
তুই তখন ভয় না পাওয়ার দিলি আশ্বাস |

তারপর ঘন্টা খানেক গল্প আর লেবু চায়ের সাথে,
ভুট্টা খাওয়া এবং then ঝালমুড়ি শেষ পাতে |

দূরে তখন ময়দান এ কিছু ছেলেরা খেলছিল ফুটবল,
গাছের ছায়া; স্নিগ্ধ বাতাস, আর ছিল শিউলি ফুলের ঢল |

হটাৎ করে তুই কাছে টেনে করলি আলিঙ্গন,
বলি এভাবেই হাতে হাত রেখে কাটবে সারা জীবন |

অকস্মৎ নামলো বৃষ্টি তখন, ভিজলো আমার মন,
তখন তুই আমার ঠোঁটের কিনারে, চরম তোর প্যাশন |

প্রেমের প্রথম পরশ তখন, তোর চুমুতেই পেয়ে,
সেটিই ছিল, আমার লাইফ এর প্রথম কিস ডে ||

Saturday 22 February 2020

চকলেট ডে



দেখ তোর জন্য এনেছি সেই তোর প্রিয় ডার্ক চকলেট ,
সেই তোর প্রিয় শপ টা, অনেক দূর তো, তাই আসতে হলো একটু লেট |

তোর কি শুধু ভালোবাসা আমার কালো রঙের প্রতি,
তার জন্য চকলেট ও ডার্ক, বেশ ফর্সা হতাম যদি |

জানি তুই বলবি আমার কৃষ্ণ রূপেই মজেছিলিস তুই,
ওরে রাধা আমার, তোর মতন সাদা হওয়ার সাধ্য কই?

যেমন শুভ্র মন টা তোর, তেমন ই তোর রূপ,
তোর কথা সোনার জন্যই অলটাইম থাকি আমি চুপ |

তোর মুখের হাসি টা, ওই nestle এর মিল্কিবার,
ডার্ক চকলেট এর ক্রেইজ টা বলি এবার তুই ছাড় |

যখন তোরে দেখি প্রথম, উড়েছিল আমার ফিউস,
৫ ষ্টার না ডেয়ারি মিল্ক দেব, ভেবে ছিলাম কনফিউজ |

মনে আছে প্রপোজ করা, সেই কিটক্যাট দিয়ে,
তারপর তো ঝগড়া শুরু, ডার্ক চকলেট নিয়ে |

এরপর বছর ঘুরে অনেক স্ট্রাগল, শেষে চাকরি পাল্টে,
ফাইনালই এনে তোর সেই ডার্ক চকলেট; হ্যাপি চকলেট ডে ||

Friday 21 February 2020

হাগ ডে



যেদিন তুই প্রথম এসে জড়িয়ে ধরলি, অদ্ভুত ছিল সে অনুভূতি,
ঘটনাক্রমে দিনটি ছিল হাগ ডে, সে ছিল অদ্ভুত এক স্মৃতি |

তোর ছোট্ট দুহাত যখন এসে আমার কাঁধ টা প্রথম ছুঁলো,
তোর মা ডাকটা এ ভিজলো আমার গলার স্বর, অশ্রুধারা বইলো |

অবাক তোর চাহুনি, তবু ওরা বলে তুই নাকি, দেখিস না রে চোখে কিছু,
মা মরা ছোট্ট তোকে, যখন এনেছিল হোম এ, ছিলি তুই বড়োই বিচ্ছু |

তোর এই মিষ্টি হাসি, দুষটু চাওয়া আর এই স্বর্গীয় আলিঙ্গন,
মনে হয়েছিল সে স্বর্গসুখ, স্নিগ্ধ হয়েছিল মন |

মিষ্টি গলায় যখন সুধালি তুই হ্যাপি হাগ ডে মাম্মি,
আমার চোখের লেন্স এ পড়লো ধরা তোর ওই নিষ্পাপ চাহুনি |

তারপর থেকে আমার চোখে  তোর এই জগৎ দেখা, শুরু এ পথ চলা,
আজ তুই অনেক বড়, শিক্ষিত তুই, তোর অদম্ম্য স্পিরিট থেকেই সব শেখা ||

প্রপোজ ডে



মনে পরে, তোর সাথে প্রথম আলাপটা ছিল বেশ,
লিফ্ট এ দেখা, প্রথম কথা.. বুঝলাম নয়তো এটা শেষ |

বরং শুরু এক নতুন গল্পের, সেই প্রথম শুভদৃষ্টি,
তারপর থেকে হটাৎ ই হতাম খুশি, দেখে অঝোর বৃষ্টি |

মাটির সেই সোঁদা গন্ধ আর তোর পারফিউম এর স্মেল,
দুটোর মধ্যে অদ্ভুত মিল আর তার কাছে আরমানি ও ফেল |

সেদিন থেকে লুকোচুরি আর সুপ্ত কিছু আশা,
ভালো থাকার খবর নেওয়া, যদিও ভিন্ন মোদের ভাষা |

ভালোবাসা তো আসলে মনের জিনিস, নয় ভাষ্যলাপ,
সেটা তো শুধু এক্সপ্রেশন এ, জরুরি নয় সংলাপ |

তোর সেই লাজুক মুখে তাকানো আর নিষ্পাপ ওই হাসি,
বুঝিস কিনা জানিনা, তবে তোকে বড্ডো ভালোবাসি |

তোর ওই ঐশরিক ভক্তিতে আমার নাস্তিকতাও হার মানলো,
প্রপোজ করছি, হবি কি আমার, আজ দুনিয়া ও জানলো ||

Thursday 20 February 2020

আমার বাংলা

বাংলা আমার আত্মপ্রকাশ, বাংলা আমার গান,
বাংলা আমার অন্তর আত্মা , আমার সম্মান |

বাংলা আমার অনুভূতি, আমার সংলাপ,
শুধু সীতাহারা রামের না, বাংলা আমার ও বিলাপ |

বাংলা আমার, ছোটবেলার নকশি কাঁথার  মাঠ এ,
বাংলা আমার শেষ পাতাতে, বাংলা বক্সিগঞ্জের হাটে |

বাংলায় মোর রাঙা মাটির  বাউল বাজায় রে একতারা,
বাংলা আমার সাধু ভাষা, আবার চলতি তেও ভরা |

বাংলা আমার আবোল তাবোল, আমার পথের পাঁচালি,
বাংলা আমার অভিমান, তবু হবে না চোখের বালি |

বাংলা আমার শঙ্খচিল আর রাবীন্দ্রিক গানে,
বাংলা আমার পরিচয়, আর আবেগ ভরা প্রাণে |

বাংলা সেই শিবরাম এর দমফাটা হাসি,
বাংলা তুই আমার প্রেম, আমি তোকেই ভালোবাসি |

বাংলা আছে পদ্মা পারে আর অপুর সংসারে,
বাংলা আমার জগৎ সভায় শ্রেষ্ঠ আসন এ রবে ||

প্রমিস ডে

তোমার প্রমিসটা ছিল ব্যাক্তিগত,তাই নাইবা করলাম প্রতিজ্ঞা দিবস উৎযাপন,
তোমার প্রমিসটা ছিল অমর, তাই ভাঙবেনা সেটাই তো তুমি করেছিলে পণ |

তোমার প্রমিসটা ছিল মোবাইল এর সেই আমার প্রিয় রিংটোন এ,
যখন চিঠি লেখা প্রথম তোমার এবং শুরু টা তোমার আমায় চিনে |

তোমার প্রমিসটা ছিল সেই প্লেষ্টোরের নতুন App এর প্রমোশন,
যেটার প্রব্লেম স্টেটমেন্ট টা ছিল, without এনি সল্যুশন |

তোমার প্রমিসটা সেই আমার পিঠের  উল্কি তে খোদাই করা,
বেকার একটা design, যেটা এখন আর যায়না তোলা |

ওহ, তোমার প্রমিসটা ছিল সেই স্বপ্নের সাপ সিঁড়ির খেলা,
ঘুম ভাঙলেই রিয়ালিটির মেঘলা সকালবেলা |

তোমার প্রমিস টা ছিল হোয়াটস্যাপ এর সেই শেষ সীন টেক্সট,
সেটা তো ছিল ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ড এর সফ্ট কনটেক্সট |

তাই ভাঙা প্রমিস এর টুকরো গুলো আজ ডাস্ট বিন এ,
সত্যি প্রতিজ্ঞাটা বড় জিনিস, আর হবো না জর্জরিত এ ঋন এ ||


Friday 7 February 2020

রোজ ডে

তিন্নি ছুটেছে, না সে ম্যারাথনের রানার নয়, হাতে তার এক গুচ্ছ লাল গোলাপ,
না তার নেই সময় কথা বলার; অথবা ফর এনি কাইন্ড অফ সংলাপ |

সে ছুটছে কারণ তাকে বসতে হবে ওই স্কুলের বাইরে,
কারণ আজ রোজ ডে; যদি পায় দেখা কোনো ইয়ং বোন আর ভাইয়ে |

সেই যে কবে স্কুলের শেষ আর বিদ্যার সাথে তার ব্রেক আপ চিরদিনের,
এখনো তবু সে ভালোবাসে অঙ্ক; সুদকষা আর ঋণের |

আর জানে মনখারাপের হিসেব নিকেশ, ফুলের আদান প্রদান,
তাইতো ফুল বিক্রি পার্ট টাইম এর, ফর অন্যের যোগান |

লাল রংটা ছিল ভীষণ প্রিয়, আজ ও তার ভালো লাগে..
মনের গভীরে কর্কটের রক্তে ভেজা বাবার মুখের ছবি  আজ ও ভাসে |

গয়না বলতে সম্বল তার মুক্ত ভরা নিষ্পাপ হাসি..
দিনের শেষ আর একটি গোলাপ; হটাৎ বাজলো ফোনের বাঁশি |

ফোনের ওপার থেকে মা শুধায়, তিন্নি বাড়ি ফিরে আয়;
তিন্নি শুধায় আসছি মাগো, কাজ আমার শেষ প্রায় |

তিন্নি ছোটে, ওই গোলাপ হাতে স্কুলের পাশের গলির দিকে,
আকাশে সন্ধ্যা নেমেছে তখন, গোধূলির আলো চিকচিকে |

থমকে দাঁড়ায় সেই স্ট্যাচুর কাছে, বলে আসতেই হলো আজি,
সবাই বলে আজ রোজ ডে; এনাও আমার শ্রদ্ধার্ঘ্য, সেলাম তোমায় নেতাজি ||